আল কোরআনে জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কে
ঠিক কি বলা হয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা হয়েছে কুরআনিক অ্যাস্ট্রোনমি বাংলা বইটিতে । এই বইটি লেখা হয়েছে মূলত আল কুরআন ও আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কে, যে বিষয়টিকে আমরা অ্যাস্ট্রোনমি( astronomy ) বলে জানি । এই বইটিতে মূলত আল্লাহ পাকের ঐশীবাণীর এবং পরীক্ষিত বিজ্ঞান ও বিশেষত গণিতশাস্ত্র কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে । আর এই ব্লক পোস্টটি হল তারই কিছু প্রতিচ্ছবি মাত্র । এছাড়া যারা ইসলামের বিভিন্ন মতবাদ দেখে এবং ইসলামের কিছু অবৈজ্ঞানিক ভূল ব্যাখ্যা দেখে তিক্ত বিরক্ত হয়েছে তাদের জন্য কিছু লেখা হয়েছে অর্থাৎ ইসলাম বিদ্বেষীরা যে উল্টাপাল্টা বকে তার জবাবও উপযুক্তভাবে দেওয়া হয়েছে বলে আমি মনে করি । সেই রকমই এক ভাইয়ের উক্তি " আপনি পুরো কোরআন ঘেটে কোথাও পাবেন না পৃথিবী গোলাকার। পাবেন না পৃথিবীর ঘূর্ণনের কথা। কেননা, এসব তথ্য কোন মূর্খ আরব রাখালের জানার কথা ছিলো না । "
![]() |
Alquran and astronomy |
এই গবেষণামুলক বইটি প্রকাশিত হয় 11ই নভেম্বর 2017 তে । এই বইয়ের প্রকাশক আশ্-শিফা ট্রাস্ট এর কর্ণধার Dr. Year Ali সাহেব । এই বইটি ধর্ম ও বিজ্ঞান ( বিষেশ করে অ্যাস্ট্রোনমির বা জ্যোতির্বিজ্ঞান ) এর এক অতুলনীয় সফল সংযোজক মলক পরিক্ষিত একটি বই । বইটিতে অত্যন্ত সচ্ছ ভাবে লেখা হয়েছে যে পরীক্ষিত বিজ্ঞান ও ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা এক এবং অভিন্ন । ধর্ম এবং বিজ্ঞান দুটোই সত্যের প্রতিচ্ছবি মাত্র ঠিক যেন একটি কম্পাস এর দুই টি ভিন্ন দিশা ।
বইটির উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় বা বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার
সূ্র্য্য, পৃথিবী, গ্রহসমূহ, চন্দ্র , মহাকাশ, পরকালের একদিন ইহকালের হাজার দিন ও আসমানের দূরত্ব ৫০০ বছর পথের নতুন গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা । রহস্যময়ী তথ্যের চূড়ান্ত ও সঠিক ব্যাখ্যা সহ সম্পূর্ণ গানিতিক বিশ্লেষণ এবং আল-কুরআনে বর্ণিত মহাকাশীয় বিষয় বস্তু গুলির প্রকৃত স্বরূপ উন্মোচন করা ।
আর এই বইটিতে রয়েছে জানা অজানা বিজ্ঞানের বহু বিষয় । বহু কাঙ্খিত, বহু প্রতীক্ষিত একটি বইয়ের নাম কুরআনিক অ্যাস্ট্রোনমি । এই বইটি আলকুরআন ও পরিক্ষিত বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এর বিভেদ কে সমূলে দূর করবে ।
" কুরআনিক অ্যাস্ট্রোনমি " বইটির গুরুত্ব :
1. হয় তো এটাই হতে যাচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র এবং প্রথম গ্রন্থ যা অ্যাস্ট্রোনমিতে কুরআনের আয়াতের প্রশান্তিমূলক ব্যাখ্যা এবং পরিক্ষিত বিজ্ঞানের বিষয়গুলির সফল সংজোযক মূলক একটি বই ।
2. এটাই হতে যাচ্ছে সেই গ্রন্থ যা 1543 খৃস্টাব্দ থেকে প্রচলিত কোপারনিকাসের সৌর-কেন্দ্রীক মতবাদ থেকে বাদ যাচ্ছে আমাদের এই পৃথিবী, কিন্তু বাকী গ্রহগুলি সৌর-কেন্দ্রীকই থাকছে । অবশ্য সূর্য কিন্তু চন্দ্রের মত পৃথিবী কেন্দ্রীক একটি উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক হিসাবেই থাকছে । অর্থাত এই মডেল টি হবে ভু-সৌর কেন্দ্রীক ( Geo-Helio Centric ) মডেল । এই মতবাদের প্রবক্তা ছিলেন বিখ্যাত ভারতীয় গণিতবিদ আর্যভট্ট এবং যোহান কেপলার সাহেব ।
3. এটাই হচ্ছে সেই গ্রন্থ যেখানে প্রথম দেখানো হল যে পবিত্র কুরআনের বহূ জায়গায় দিন-রাত্রির অর্থ পৃথিবীকে ব্যাক্ত করা হয়েছে । অর্থাৎ দিন অর্থ পৃথিবীর অর্ধ ছায়াবৃত্ত এবং রাত্রির অর্থ পৃথিবীর অর্থ আলোকবৃত্ত অর্থাত দিনরাত্রি অর্থ হচ্ছে গোলাকার পূর্ণাঙ্গ পৃথিবী ।
4. এটাই সেই গ্রন্থ যেখানে প্রথম সম্পূর্ণ গাণিতিক ভাবে দেখানো হয়েছে কুরআনের 1000 বছরের যাতাযাতের পথ এবং হাদীশ শরীফের 500 বছর পথের দূরত্বের একটি ব্যাখ্যা হল পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যেকর দূরত্ব 1 A.U. অর্থাৎ পৃথিবী থেকে সূর্য যেখানে অবস্থান করছে সেই দূরত্ব ।
5. এই গ্রন্থই প্রমাণ করবে কুরআন মানুষকে সঠিক পথ দেখান এমন কি এই আধুনিক বিজ্ঞানকেও পথ দেখায় ।
6. এটাই সেই গ্রন্থ যেখানে সর্ব প্রথম নিশ্চয়তা দেওয়া হল যে বিশ্ব-ব্রহ্মান্ডে পৃথিবীই স্থির কুরআনের তথ্যের উপর ভিত্তি করে ।
পৃথিবীর অবস্থান, আহ্নিক গতি, চাঁদ-সূর্যের পরিক্রমণের স্পষ্ট বাণী আল-কুরআনে
মহান আল্লাহ পাক পৃথিবীর অবস্থান সম্পর্কে বলেছেন :-
وَمِنۡ اٰيٰتِهٖۤ اَنۡ تَقُوۡمَ السَّمَآءُ وَالۡاَرۡضُ بِاَمۡرِهٖ ؕ [ 30 : 25 ]
" তাঁর নিদর্শন সমুহের মধ্যে এটাও একটি (নিদর্শন) যে, তাঁরই আদেশে আকাশ ও পৃথিবী স্থির রয়েছে । "
[ 25 : 30 ]
اِنَّ اللّٰہَ یُمۡسِکُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ اَنۡ تَزُوۡلَا ۬ۚ وَ لَئِنۡ زَالَتَاۤ اِنۡ اَمۡسَکَہُمَا مِنۡ اَحَدٍ مِّنۡۢ بَعۡدِہٖ ؕ اِنَّہٗ کَانَ حَلِیۡمًا غَفُوۡرًا ﴿۴۱﴾
( 35:41 )
আল্লাহই আসমানসমূহ ও যমীনকে স্থির রাখেন যাতে উহারা ( আকাশসমূহ ও পৃথিবী ) টলে না যায় । আর উহারা যদি টলে যায় তাহলে তিনি ছাড়া কে এ দু’টোকে স্থির রাখবে ? তিনি পরম সহিষ্ণু, পরম ক্ষমাশীল ।
এই আয়াত দুটি থেকে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে আমাদের এই পৃথিবী বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের মধ্যেই অবস্থান করছে । এটা একটি প্রতি ধ্রুব সত্য কথা যে পৃথিবীর গোলাকার তার প্রমাণ আছে। পৃথিবীর আহ্নিক গতি তারও উপযুক্ত বিজ্ঞান সম্মত প্রমাণ আছে। কিন্তু পৃথিবীর সূর্যের চারিদিকে ঘোরে অর্থাৎ পৃথিবীর বার্ষিক গতির কোন প্রমাণ নেই ! আর যেসব প্রমাণ দেখা যায় তার সব কটি অনুমান মাত্র ।
মহান আল্লাহপাক অত্যন্ত সুকৌশলে পৃথিবীর আহ্নিক গতির কথা ব্যক্ত করেছেন । কালাম পাকের বহু জায়গায় পৃথিবীর কথা উল্লেখ না করে রাত দিনকে বলা হয়েছে । অর্থাৎ দিন অর্থ পৃথিবীর অর্ধ ছায়াবৃত্ত এবং রাত্রির অর্থ পৃথিবীর অর্থ আলোকবৃত্ত অর্থাত দিনরাত্রি অর্থ হচ্ছে গোলাকার পূর্ণাঙ্গ পৃথিবী ।
8. এই গ্রন্থে দেখানো হয়েছে পৃথিবীর সঠিক অভিকর্ষ ত্বরণের মান ।
9. এই গ্রন্থেই আছে এক-কেন্দ্রীক বস্তুর ঘুর্ণন সূত্র এটা একটি অতি মূল্যবান সম্পদ ।
10. আর একটি নূতন ধ্রুবক--- মহাকর্ষীয় বৃত্তীয় ধ্রুবক C কে চিহ্নিত করা হয়েছে যা চন্দ্র এবং সূর্যের ভরকে নিখুঁত ভাবে নির্ণয় করতে এবং বুঝতে সাহায্য করবে ।
11. আমার ধারণা এই গ্রন্থ ধর্ম এবং বিজ্ঞানের বিভেদ দূর করে একটি উপযুক্ত সমাধান নিয়ে আসবে যা ধর্ম ও বিজ্ঞান এর সাংঘর্সিকতাকে দূর করবে ।
আল্লাহ্ সত্যকে জানার প্রজ্ঞা দান করুক ( آمين ) ।
FAQ
Question: বিজ্ঞান ও ধর্মের মধ্যে সম্পর্ক কেমন ?
Answer : সঠিক ধর্ম এবং সঠিক বিজ্ঞান এর মধ্যে কোনরূপ পার্থক্য নেই ।
Question : বিজ্ঞান ও ধর্মের মধ্যে পার্থক্য কি ?
Answer : ঐশীবাণী হল প্রকৃত সত্য ধর্ম আর ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য জ্ঞান হল বিজ্ঞান । আর বিশুদ্ধ ঐশীবাণী ও বিশুদ্ধ বিজ্ঞান উভয়ই সত্য এক এবং অভিন্ন ।
0 মন্তব্যসমূহ