একই দিনে ঈদ উৎসব কেন হবে না ?

  একই দিনে ঈদ উৎসব কেন হবে না  এই কম্পিউটার ইন্টারনেটের যুগে ?


Eid festival on the same day
  
আমাদের কাছে কোরআন আছে হাদিস আছে আর আছে উন্নত বিজ্ঞান । এরপরও আমরা আন্তর্জাতিক হিজরী তারিখ রেখা গঠন করতে পারিনি ! এর মূল কারণ হলো আমরা ধর্মের সঠিক মূল্যায়ন করতে পারিনি অপর দিকে বুঝতে পারিনি সঠিক বিজ্ঞানকেও ।    এখন আমরা হয়েগেছি   "ধোবী কা কুত্তা  "  আমারা এখন ঘরকে সামাল দিতে পারছিনা আবার ঘাটকেও সামাল দিতে পারছি না ।
  বড় দুঃখ, কষ্ট ও লজ্জার কথা ১৮৮৪  তে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা প্রতিষ্ঠা হলেও আজও আমরা আরবী তারিখ রেখা ঠিক করতে পারিনি কারণ একটাই যে, আজও আমরা বিজ্ঞানকে সেভাবে গুরুত্ব দিতে পারিনি যতটা প্রয়োজন ছিল । এই কম্পিউটার-ইন্টারনেটের যুগে আন্তর্জাতিক আরবী-তারিখ রেখা নির্ণয় করা অতি বাস্তব এবং সহজ একটি বিষয় । এটা আবার ১০০% ইসলাম সম্মত একটি বিষয় ।  তার আগে একটি কথা বলে রাখি কোরআন হাদিস এবং অ্যাস্ট্রোনমি এর সঠিক সারমর্ম অনুসারে পৃথিবী তার নিজ কক্ষে 23 ঘন্টা 56 মিনিট 4.1 সেকেন্ড আবর্তন করছে এবং চাঁদ পৃথিবী কে 27⅓ দিন পরিক্রমা করছে আর সূর্য পৃথিবী কে 365¼ দিনে প্রদক্ষিণ করছে । এটি পরম সত্য । যার কোন বিকল্প নেই ।


    হাদীসে চাঁদ দেখার কথা যেমন এসেছে ঠিক তেমনি ভাবে আবার হিসাব করার কথাও এসেছে যেমন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেছেন 
    “  لا تصوموا حتى تروا الحلال و لا تفطروا حتى  تروه ، فإنه غم عليکم فاقدروا له " 
     ( رساءل ابن عابدين   :  245 )
     ” তোমারা রোজা রাখো না যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা চাঁদ না দেখো এবং তোমারা রোজা বন্ধ করো না যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা উহাকে ( চাঁদকে ) কে না দেখো আর যদি তোমাদের থেকে উহা ( চাঁদ ) লুকিয়ে থাকে তবে তোমরা উহার ( চাঁদের )
    হিসাব করো । " 
     এই হাদীসটির ব্যাখ্যার মতভেদ তো অবশ্যই আছে এখন আমি তার কেবলমাত্র সত্যটা তুলে ধরছি । আসল কথা হল এই চাঁদ আমাদের দেখতে হবে তারপর ঐ চাঁদের আবার হিসাবও করতে হবে । কেন এই কম্পিউটার-ইন্টারনেটের যুগে আন্তর্জাতিক আরবী-তারিখ রেখা নির্ণয় করা সম্ভব হবে সে কথাই বলছি প্রথমেই আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে একটি চাঁদ-কমেটি যার কাজ হবে পৃথিবীর কোথাও সাক্ষীসহ শরীয়ত সম্মত নতুন চাঁদ দেখা গেলে তা সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা দেওয়া । এবং তার সঙ্গে এটাও ঘোষণা করা যে ঐ স্থানটির পশ্চিমে অর্থাৎ যেখানে চাঁদ দেখা গেল ঐ দ্রাঘিমারেখা সহ তার পশ্চিমে সকল দেশের চাঁদ হয়েছে এবং ঐ স্থানটির পূর্বে দেশগুলোতে ঐ দিন চাঁদ হয়নি । এই হিসেবে সারা পৃথিবীতে মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যেই রোজা ও ঈদ উৎসব পালন করা সম্ভব । যেটা হবে ইসলামসম্মত এবং বিজ্ঞানসম্মত । অনেকে মনে করে আরবে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে আগে চাঁদ দেখা যায় এটা সম্পূর্ণ ভূল কথা,  পৃথিবীর যে কোন স্থান থেকেই সর্বপ্রথম চাঁদ দেখা সম্ভব । চাঁদের সাথে আরবের কোন বিশেষ আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই যে তারা আগে চাঁদ দেখবে ।  হাঁ, তবে আরবের আকাশ আমাদের থেকে কিছুটা হলেও পরিষ্কার তাই আগে চাঁদ দেখার সম্ভাবনা একটু বেশি তার বেশি কিছুইনা ।  আর মেরু অঞ্চলের দেশগুলোতে যেখানে সপ্তাহ ভোর চাঁদই দেখা যায় না তারা তাদের অতি-নিকটের দেশেগুলিকে অনুসরণ করতে হয় এখন আর তারও কোন প্রয়োজন হবে না শুধুমাত্র দ্রাঘিমারেখা দেখেই ঠিক করা যাবে কোথায় চাঁদ হবে আর কোথায় চাঁদ হবে না।  আর এইভাবেই প্রতিষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার মতই আন্তর্জাতিক চন্দ্র-মাসরেখা 
    ( International Lunar Month Line ) এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো এই লাইনটা কোন স্থির-রেখা নয় বরং পরিবর্তনশীল ইহা প্রতি মাসে এই রেখাটি তার অবস্থান পরিবর্তন করবে ।  অঙ্কের হিসাব তো এটাই বলে যদি কোন জায়গায় প্রথম দিন চাঁদ দেখা যায় তাহলে পশ্চিমে সকল দেশের চাঁদ অবশ্যই হবে। এই নিয়ম মেনে চললে International Arabic Date Line 
    ( আন্তর্জাতিক আরবী তারিখ রেখা ) প্রতিষ্ঠিত হবে । সেই ১৯৮৪ তে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আর এখনও আমরা ঘুমাচ্ছি । আর পালন করছি একই উৎসব দুদিন - তিনদিন ধরে । ইসলামে কি সত্যিই কোন সংস্কার নেই ?  আর যদি তাই হয় তাহলে আমরা ঘড়ির সময় দেখে নামাজ পরি কেন ?  যেখানে সূর্যের অবস্থান দেখে নামাজ আদায় করার কথা হাদিস শরীফের মধ্যে এসেছে  ।  আসল কথা হলো যেখানে সূর্য একটা সেখানে সৌরদিন হবে একটা আর যেখানে চন্দ্র একটা সেখানে চন্দ্র দিনও একটা হওয়াই স্বাভাবিক এবং বাস্তব । সূর্যের ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি পূর্বের দেশগুলোতে আগে সূর্য উদয় হয় এবং পশ্চিমের দেশগুলোতে পরে সূর্য উদয় হয় । আর এই ভাবেই 24 ঘন্টার মধ্যেই সারা পৃথিবীতে একটি পূর্ণ দিন সংঘটিত হয় । চাঁদের ক্ষেত্রেও ঠিক এমনই হয় তবে ব্যাপারটা সামান্য ভিন্ন মাত্র । অমাবস্যার রাত্রিতে পৃথিবীর কোথাও থেকে চাঁদকে দেখা যায়না। তারপর চাঁদ আস্তে আস্তে বড় হয় এবং এক সময় চাঁদ দেখার উপযুক্ত হয় এবং পৃথিবীর কোন এক জায়গা থেকে ওই চাঁদকে দেখা যায় যে জায়গায় সর্বপ্রথম চাঁদকে দেখা যাবে ওই জায়গাটি হবে ওই দিনের  চন্দ্র মাসের শুরু । পৃথিবীতে যে জায়গাটি প্রথম চাঁদ দেখা গেল ওই দ্রাঘিমা রেখার পশ্চিমের যত দেশ আছে তাদের প্রত্যেকটির চাঁদ হয়েছে বলে গণ্য করতে হবে এবং পূর্বের দেশগুলি কে পরের দিনে চাঁদ কে ধরতে হবে । ঠিক এই ভাবেই সৌর দিনের মতো সারা পৃথিবীতে 24 ঘন্টার মধ্যে চন্দ্র  দিন সম্পাদিত হবে । সুতরাং আমি এখন থেকে আশা করছি আগামী বছরগুলোতে একই দিনে অর্থাত 24 ঘণ্টার মধ্যেই সারা পৃথিবীতে ঈদ উৎসব পালিত হবে, এতে কোন সন্দেহ নেই । 

    ইসলাম ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংস্কার


     এর আগেও ইসলামিক রীতিনীতি সংস্কার বহুবার হয়েছে আগের তলোয়ার নিয়ে যুদ্ধ করত বর্তমানে বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র বন্দুক দিয়ে যুদ্ধ করা হয় আগে খালি মুখে উঁচু জায়গা আযান দেওয়া হতো । এখন নিচু জায়গা থেকে লাউডস্পিকারে আযান দেওয়া হয় । আগে কোরআন শরীফে যের যবর বসানো হয়নি এখন জের যবর বসানো হয়েছে । আগে কুরআন শরীফ হাতে লেখা হতো বর্তমানে টাইপিং ব্যবস্থা এসেছে এইরকম দৃষ্টিভঙ্গিতে ইসলামের বহু সংস্কারের সন্ধান পাওয়া যায় ।
    আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে সত্য বোঝার তৌফিক দান করুক !

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ