পবিত্র কাবা শরিফ কি পৃথিবীর কেন্দ্রে অবস্থিত ?

আমাদের পৃথিবী ডিম্বাকার বা অভিগত গোলক মাত্র সুতরাং কাবাহ্ শরীফ পৃথিবী কেন্দ্রে অবস্থিত হওয়ার কোন প্রশ্নই   নেই । তবে এটা যে ইসলাম ধর্মের ইবাদতের মূল কেন্দ্রস্থল এতে কোন সন্দেহ নেই । আবার এটাও সন্দেহ নেই যে পৃথিবীর স্থলভাগের কেন্দ্রস্থল হল মক্কাহ্ নগরী আবার মক্কাহ বা বাক্কাহ নগরীর প্রাণকেন্দ্র হলো এই পবিত্র কাবা শরীফ । 

 কা'বাহ্ শরীফ পৃথিবীর মধ্যস্থলে :


Kaaba, ka'abah,kabah,  Meccah, Mecca Bakkah
Kaaba is center of the world 

আরো পরিষ্কারভাবে বলতে গেলে বিষয়টি দাঁড়ায় এরকম যে ভৌগোলিক দিক থেকে বিচার করলে আমরা জানতে পারি যে পৃথিবীর তিনভাগ জল একভাগ স্থল আর এই স্থলভাগের কেন্দ্রস্থল হল এই মক্কা শরীফ বা কাবাহ্ শরীফ । আমরা পৃথিবীর স্থলভাগকে লক্ষ্য করলে দেখতে পায় যে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে স্থলভাগের পরিমাণ বেশি এবং দক্ষিণ গোলার্ধে জলভাগের পরিমান বেশি । অপরদিকে আমাদের পৃথিবীতে মক্কাহ বা বাক্কাহ নগরী বা কাবা শরীফ অবস্থিত রয়েছে গোল্ডেন রেশিওর মধ্যখানে । এটা খুবই অবাক করার মত একটি বিষয় !
 এটা যে একজন মহান সার্ভেয়ার এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম ইবাদত খানাকে নিখুঁত এক স্থানে নির্বাচন করেছেন তা সহজেই অনুমান করা যায় ! যেহেতু পৃথিবীর আকার প্রায় গোলাকার তাই দূরত্ব দিয়ে না মেপে একে আমরা ডিগ্রি দিয়ে নির্ণয় করতে চাইছি । যদি আমারা এটিকে দূরত্ব দিয়ে নির্ণয় করি তবুও প্রায় একই ফলাফল পাব ।

 এই কাবাহ শরীফের অবস্থান :- 


Latitude: 21° 25' 12.59" N
Longitude: 39° 49' 20.39" E

 Or,
  
21.420164986° N
39.822330044° E
  
 
~ 21.42 N 39.82 E

যেটা সত্যিই এক বিস্ময়কর ব্যাপার । কিন্তু আমি এটা মোটেই বুঝে উঠতে পারি না আজও পাঠ্য বইতে বা পাঠ্যসূচিতে এই গোল্ডেন রেশিওকে কেন গোপন রাখা হয় বা গোল্ডেন রেশিওকে কেন এড়িয়ে চলা হয় ।

গোল্ডেন রেশিও ( Golden Ratio) 


 স্রষ্টার এই সৃষ্টিতে বা প্রকৃতিতে এই গোল্ডেন রেশিওর গুরুত্ব এত বেশি যে আমরা কল্পনাও করতে পারি না । আমাদের পাঠ্যপুস্তকে গোল্ডেন রেশিওকে গুরুত্ব না দেওয়া, আমি মনে করি স্রষ্টাকে লুকিয়ে রাখার বা অস্বীকার করার 
সমান ।  আমরা জানি পৃথিবী প্রায় গোলাকার । পৃথিবী গোলাকার হলেও ভৌগোলিকভাবে আমরা পৃথিবীর শেষ সীমানা উত্তর ও দক্ষিণ মেরু দুটিকে ধরতে পারি । অপরদিকে আমরা পৃথিবীকে যদি পূর্ব পশ্চিম এ দুটো ভাগে বিভক্ত করি তাহলে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা যেখান দিয়ে গেছে সেখানটাই হবে পৃথিবীর পূর্ব এবং পশ্চিমে বিভক্ত রেখা। অর্থাৎ আমি বলতে চাইছি আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা যে স্থানটি দিয়ে গেছে ওর কাছাকাছিই পৃথিবী দুটো ভাগে বিভক্ত হয়েছে । এইভাবে আমরা যদি পৃথিবীকে পূর্ব-পশ্চিমের দুটো ভাগে বিভক্ত করি তাহলেও পৃথিবীর মধ্যে কাবা শরীফই হবে গোল্ডেন রেশিওর মধ্যখানে । বস্তুতপক্ষে আমাদের এই পৃথিবীর বিশাল ভূখণ্ড বেরিং প্রণালীর মাধ্যমে যেখানটা দিয়ে আন্তর্জাতিক তারিখ দেখা গেছে তার কাছাকাছি স্থান থেকেই আমাদের ভূমিভাগের পূর্ব-পশ্চিমের বিভক্ত হয়েছে । অর্থাৎ পূর্ব পশ্চিমে উত্তর দক্ষিনে যেভাবেই আমরা কাবা শরীফকে বিচার করি না কেন কাবা শরীফই হচ্ছে পৃথিবীর গোল্ডেন রেশিওর মধ্যখানে ! এখন একটি গোল্ডেন রেশিওর উদাহরণ দেওয়া যাক । মানুষের আকৃতি লম্বাটে তাই সুবিধার জন্য এটিকে একমাত্রিক একটি আকার ধরা যাক । এখানে মানুষের গোল্ডেন রেশিও হল নাভি । অর্থাৎ নাভিকে এখানে ভরকেন্দ্র হিসেবে ধরলে ইহার অনুপাত হবে -  1.618  ~ 1.62
পৃথিবীর দক্ষিণ মেরু থেকে কাবাহ্ শরীফের কৌণিক দূরত্ব 
90°+21.42° = 111.42°
 অপরদিকে পৃথিবীর উত্তর মেরু থেকে কাবাহ্ শরীফের কৌণিক দূরত্ব
 180°- 111.42° = 68.58°
এই হিসাবে কাবা শরীফের গোল্ডেন রেশিওর মান হবে :
 111.42/68.58 
 = 1.62  (প্রায়)
   এখন পৃথিবীকে পূর্ব-পশ্চিমে বিভক্ত করলে হিসাবটা দেখা যাক । বাইতুল্লাহ শরীফ বা কাবা শরীফ গোল্ডেন রেশিওর মধ্যে অবস্থিত । দুই দশমিক পর্যন্ত গোল্ডেন রেশিওর মান 1.62 
 ধরা যাক, কাবাহ্ শরীফ থেকে পূর্ব দিকে পৃথিবীকে যে জায়গায় পূর্ব-পশ্চিমে বিভক্ত করেছে তার মান x°
 তাহলে গাণিতিক শর্ত অনুসারে পায় 

 ( 360 - x )/x = 1.62 
 এই সমীকরণ থেকে আমরা x এর মান পাব x = 137.40°
 অর্থাৎ পূর্ব-পশ্চিমে পৃথিবীকে দুই ভাগে বিভক্তকারী দ্রাঘিমারেখাটি মান হবে :-
 137.40°E + 39.82°E 
= 177.22°E 
 অর্থাৎ পৃথিবীকে পূর্ব-পশ্চিমে বিভক্তকারী রেখাটি হবে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা থেকে মাত্র 2.78° পশ্চিম দিকে । যেটাকে আমরা সহজেই মেনে নিতে পারি ।

এই হিসাবে কাবা শরীফ হচ্ছে পৃথিবীর গোল্ড গোল্ডেন রেশিওর মধ্যখানে এবং স্থলভাগের কেন্দ্রস্থলে ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ